খানাকুল
ভারতের বহু জায়গা ভ্রমণপ্রিয় মানুষকে বারে বারে টেনে আনে। কেউ আসেন আধ্যাত্মিক ভাবনায় ভাবিত হয়ে, কেউবা শুধুই অজানাকে জানার আনন্দে। উদ্দেশ্য যাই হোক, পথবিলাসী মানুষদের চরণচিহ্ণ পড়তে পড়তে এক একটি স্থান বিখ্যাত হয়ে
ওঠে। আজ আপনাদের নিয়ে যাব আরামবাগ মহকুমার খানাকুলে। আরো নির্দিষ্ট করে বললে, কৃষ্ণনগরে।কথিত আছে এটি একটি শক্তিপীঠ। "কাব্য মীমাংসা"য় রত্নাবলী বলে যে জায়গার কথা উল্লেখ আছে, তা সম্ভবতঃ খানাকুলের কৃষ্ণনগর গ্রাম। কারন এর পাশ দিয়ে একদা যে রত্নাকর নদী বয়ে যেত, আজ তা কানানদী নাম নিয়ে অদূরে বয়ে চলেছে।এখানে নাকি সতীর ডান কাঁধ পতিত হয়েছিল। এর সত্যতা নির্নয় করা আজ প্রায় অসম্ভব।ভারতচন্দ্রের মতে এখানকার দেবীর নাম শিবা এবং ভৈরবের নাম কুমার। পীঠনির্ণয়ে বলা হয়েছে দেবীর নাম কুমারী আর ভৈরব শিব। সন্ধ্যায় গিয়ে দেখলাম দেবী অন্ধকারে থাকতে চান। পুরোহিত বল্লেন মন্দিরের ভিতরে বৈদ্যুতিন আলো দেবার অনুমতি নেই। শ্মশানের বুকে বিরাজিত দেবীর ছবি তুললাম মোমের আলোয়।সারা বছর ধরে অগণণ মানুষ আসেন এখানে।
কয়েক হাত দূরে আছেন দেবীর ভৈরব শিব। ঘন্টেশ্বর নামে খ্যাত। এই বিজ্ঞানের যুগেও শত শত মানুষ আসেন টিউমার সারানোর মানত নিয়ে। উপাচারটিও চমকপ্রদ। নারিকেল। চিরকালীন বেলপাতার বদলে নারিকেল। লোকসংস্কৃতির গবেষকরা ভেবে দেখতে পারেন। যাই হোক, চৈত্রের গাজনে এখানে মেলা বসে। স্থানীয় মানুষ জানালেন, এখানে শিবের জনপ্রিয়তা বেশী।
পুরাণের গল্পের প্রামান্যতা পাওয়া কঠিন হলেও ইতিহাস বলে অদূরের রাধানগর গ্রাম নাকি তন্ত্র সাধানার জন্য বিখ্যাত। কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ নাকি এখানেই কালী পূজা করেছিলেন। আর ক'দিন পরে বঙ্গদেশে যে কালী পূজা হবে, শোনা যায় তার জনপ্রিয়তা নাকি তাঁর হাত ধরে ঘটেছিল।
আর রাধানগর গ্রাম আরেকটি ঐতিহাসিক কারনে বিখ্যাত। ঠিক ধরেছেন, রাজা রামমোহন রায়ের জন্মস্থান।সে কথা্ , আরেকদিন। যেতে ইচ্ছে হচ্ছে ? তবে বেরিয়ে পড়ুন। হাওড়া থেকে ট্রেনে তারকে'শর। সেখান থেকে গড়েরঘাট গামী বাসে রামনগর মোড়ে নেমে একটু হাঁটুন।অথবা ডানকুনি থেকে চন্ডীতলা - চাঁপাডাঙ্গা হয়ে মায়াপুর মোড় থেকে মাত্র ১৪ কি,মি।
তথ্যসূত্রঃ শক্তিপীঠ- যতীনন্দন দেবশর্মণ। প্রকাশক- .নিজস্ব কমিউনিকেশন ।
If you have any difficulty to see Bengali font, you may download Bengali Unicode Software after observing all formalities.